শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩

Brahmgyan || ব্রহ্মজ্ঞান একটি মুক্ত আহ্বান

ব্রহ্মজ্ঞান মুক্ত আহ্বান 


 

ব্রহ্মজ্ঞান একটি মুক্ত আহ্বান : বিশ্বশান্তি কীরূপে আসবে । --------ব্রহ্ম জ্ঞান থেকে ।

ব্রহ্মজ্ঞান কোথায় পাওয়া যাবে ? --------দিব্য জ্যোতি জাগ্রতি সংস্থানে ।

ব্রহ্মজ্ঞান একটি মুক্ত আহ্বান
ব্রহ্মজ্ঞান একটি মুক্ত আহ্বান 



অখণ্ডৈকরসঁ ব্রহ্ম নিত্যমুক্তং নিরাময়ম্ ।

সস্মিন্ সন্দর্শিতং য়েন স ভবেদস্য দেশিকঃ ।।

                   (গুরুগীতা)

অখণ্ড, একরস, নিত্যমুক্ত এবং নিরাময় ব্রহ্মকে জিজ্ঞাসুর হৃদয়ে যিনি দেখিয়ে দেন – তিনিই সদগুরু তিনিই পরমগুরু যিনি জীবরূপী ভানুকোটি(হাজার সূর্যের সমান) আলোককে আমাদের হৃদয়ে প্রকট করিয়ে দেন । সরল ভাষায় বলা যায় যিনি ঈশ্বরের তত্ত্বস্বরূপ অর্থাৎ জ্যোতিরূপ আমাদের ভিতরেই দর্শন করিয়ে দেন তাঁকেই পরম গুরু বলা হয় তথা এক জিজ্ঞাসুর উচিৎ তারই শ্মরনাগত হওয়া । ইনিই একমাত্র আমাদের প্রকৃত রোগ ও সবচেয়ে বড়রোগ তা হল আত্মা পরমাত্মার থেকে আলাদা বা দূর হয়ে যাওয়ার কারণে বারবার জন্ম মৃত্যুর বন্ধনে আবদ্ধ থাকার রোগ অর্থাৎ ভবরোগ । তিনি এই ভবরোগ দূর করবার জন্য আমাদের চার ফল প্রদান করে জন্ম মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত করে দেন ।

 

দুলভ দেহ পাই বড়ভাগী । নামু ন জপহি তে আতম ঘাতী ।।  

                                                                                 (গুরবাণী – ৫/১৮৮)

বলা হয়েছে, সদগুরু বিনা নামের প্রাপ্তি হতে পারে না, প্রভু এরকম নিয়ম বানিয়েছেন । আজ যে মনুষ্য তন আমরা পেয়েছি, সেটা অত্যন্ত দুর্লভ । কিন্তু এই দুর্লভ তন প্রাপ্তির পরেও যদি মনুষ্য প্রভুর নামের স্মরণ না করে তাহলে তাকে আত্ম ঘাতী অর্থাৎ আত্ম হত্যাকারী বলা হয়েছে ।

জপ তপ সংযম সাধনা সব সুমিরন কে মাহি ।

কবীর জানে ভক্ত জন সুমিরন সম কছু নাহি ।।

                                                                     (কবীর)

         কবীর বলেছেন যে যতই জপ-তপ ইত্যাদি কর্ম রয়েছে সেগুলির মধ্যে নাম সুমিরনের(স্মরনের) সমান আর কিছুই নেই । কিন্তু এই সত্যতাকে কেবল ভক্ত জনই বুঝতে পারে ।

কোটি নাম সংসার মেঁ তাঁতে মুক্ত না হোই ।

আদি নাম জো গুপ্ত জপে বিরলা বুঝে কোই ।।

                                                                 (কবীর)

         এই সংসারে প্রভুকে কোটি নামে ডাকা হয় । কবীর বলেন সেইসব নামের দ্বারা মুক্তি হতে পারে না । অতএব প্রয়োজন হল সেই আদি নামের যা কিনা অত্যন্ত গুপ্ত । যা নিরন্তর আমাদের অন্তঃকরণে চলছে । কিন্তু আমরা সেই গুপ্ত নাম থেকে অনভিজ্ঞ । সেই নামের প্রাপ্তি আমাদের পূর্ণ সদগুরুর দ্বারা হতে পারে ।

মহামন্ত্র জোই জপত মহেসু । কাসী মুকুতি হেতু উপদেসু ।।

মহিমা জাসু জান গনরাউ । প্রথম পুজিঅত নাম প্রভাউ ।।

                                                                             (রা চ মা – ১/১৯/২)

         যে নামের মহিমার প্রতাপের কারণে গনেশ জী সর্বপ্রথম পুজিত হন, আমাদেরও সেই মহামন্ত্রের জপ করতে হবে  যে মহামন্ত্রের জপ মহেশ করেন । যে মুক্তির হেতুর জন্য কাশীতে মধ্যে উপদেশ দেওয়া হয় । কিন্তু জানতে হবে যে সেই কাশী কোনটি ? আজকাল মনুষ্য কাশী একটি স্থানের নাম রেখে দিয়েছে এবং এটা প্রচার করে দিয়েছে যে সেই স্থানে মরলে মুক্তি হয় ।  আজকের মনুষ্য স্বার্থের বশে ধর্ম গ্রন্থগুলিকে মনগড়া অর্থ বের করেছে এবং সবাইকে অজ্ঞানের ভ্রমজালে ফাঁসিয়ে দিয়েছে । যেখানে শাস্ত্রে কাশী কাকে বলা হয়েছে ।

কাশয়াঁতু মরণামুক্তিঃ ।

কাশঃ ব্রহ্ম তত্ত্ব প্রকাশ য়স্যাঁ অবস্থায়াং সা কাশী ।।

         এটা তো ঠিক যে কাশীতে মরলে মুক্তি মিলে । এতে কোনও সংশয় নেই, কিন্তু কাশী কোনো স্থানের নাম নয়, বরং কাশী হল এক অবস্থার নাম, যে অবস্থায় ব্রহ্মের পরম প্রকাশের বা জ্যোতির দর্শন হয় এবং সেই প্রকাশেই নিজের ধ্যানকে স্থির করে যে ব্যক্তি এই দেহ ত্যাগ করে কেবল সেই ব্যক্তিই মুক্তির অধিকারী হন । সেই নাম কোথায় যা শব্দের ‘পরে ?

অব্যক্তোক্ষর ইত্যুক্তস্তমাহুঃ পরমাঁ গতিম্ ।

য়ং প্রাপ্য ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমং মম ।

                                                                     (গীতা – ৮/২১)

         যে ব্যক্তি সেই অব্যক্ত অক্ষরকে জানে, সেই পরম গতিকে প্রাপ্ত করে নেয়, যেখান থেকে পুনরায় আবাগমনের বন্ধনে ফিরতে হয় না, সেটাই আমার পরম ধাম । এরকম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন । স্মরণের সম্বন্ধে স্পষ্ট করে বলেছেন যে প্রভুর স্মরণ করার জন্য সংসারের কিছুই ছুটে না, অর্থাৎ সংসারের কার্য করতে করতে স্মরণও করা সম্ভব । যেমন টি অর্জুনকে বলেছেন, তুমি আমার সুমিরন কর এবং সেই সাথে সংসারের যুদ্ধও লড়ে যাও । তিনি অর্জুনের হাতে মালা ধরিয়ে যুদ্ধের ধনুর্বাণ চালাতে অক্ষম করে দেন নি । তিনি অর্জুনের প্রাণে সেই অজপা নামের মালা প্রদান করেছিলেন ।

আমরাও তো গাই,

ছাড়োরে মন ভবের আশা, অজপা নামে করোরে নেশা ।

         কিন্তু অজপা নাম পেয়েছি কী ? একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন । সেই নাম যা জপ করা যায় না তা যদি না পেয়ে থাকেন তাহলে নিঃসঙ্কোচে এগিয়ে আসুন । ব্রহ্মজ্ঞান প্রাপ্ত করুন । জীবন সফল বানান ।

ধর্ম পিপাসু প্রতিটি ব্যক্তিকে মুক্ত আহ্বান জানানো যাচ্ছে আসুন আমরাও ঈশ্বর দর্শন করে ধর্মের লাভ উঠাই এবং বিশ্বশান্তির বিরাট মিশনে নিজস্ব যোগদান দিই।


ব্রহ্মজ্ঞান একটি মুক্ত আহ্বান: বিশ্বশান্তি কীরূপে আসবে ।--------ব্রহ্ম জ্ঞান থেকে ।

ব্রহ্মজ্ঞান কোথায় পাওয়া যাবে ? --------দিব্য জ্যোতি জাগ্রতি সংস্থানে ।


আরো বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন